The psychology of money : ধনী (Rich) । কথাটির মধ্যেই যেনো রয়েছে একটি অন্যরকম ভাব। আমরা অধিকাংশ মানুষ এই ধনী হতে চাই। আমরা সবাই চাই অধিক পরিমাণে টাকা উপার্জন করতে। কিন্তু টাকার সঙ্গে কিভাবে ব্যবহার করা উচিত ও টাকাকে কিভাবে সঠিক পদ্ধতিতে কাজে লাগানো উচিত এ নিয়ে আমাদের কোন প্রকার জ্ঞান নেই।
আসলে আমরা এই কারণেই ধনী শব্দ থেকে অনেক দূরে রয়েছি। আমরা সর্বদা ধনী শব্দটি বলার সঙ্গে সঙ্গেই টাকা পয়সা এছাড়া ও অন্যান্য কিছু নিয়ে ভাবতেই থাকি। আসলে টাকা পয়সা কে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে জানলে আমরা আমাদের হাতে থাকা সামান্য পয়সা কেউ অনেক ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারি এবং অনেক টাকা উপার্জনও করতে পারি।
এছাড়াও আমরা চাই টাকা পয়সার মাধ্যমে নিজের মর্যাদা অনেকটা বাড়িয়ে নিতে। আর এর মাধ্যমে আমরা ভুলে যাই আমাদের জীবনের একটি লক্ষ্য রয়েছে। আমরা উপার্জনের থেকেই অধিক পরিমাণে ব্যয় করতেই পছন্দ করি। আমাদের তখন অনুভবেই হয় না যে টাকা সঙ্গে কিভাবে ব্যবহার করলে মানুষ আমাদেরকে পছন্দ করবে বা ভ্যালু দেবে। মানুষের মর্যদা পাওয়ার জন্য টাকাটা কতটা প্রয়োজন এটাও আমরা সঠিকভাবে আন্দাজ করতে পারি না।
Money psychology:
আমরা প্রতিনিয়ত কোন না কোনভাবেই ইনকাম করেই চলেছি কিন্তু টাকা উপার্জন করা, উপার্জন করার টাকাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা ও রক্ষা করা, এবং কোন একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ইনভেস্ট করা , আসলে এগুলো হচ্ছে একটি মানুষের স্কিল। আমাদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষ এই ব্যাপারটিকে নজর করে না বা এড়িয়ে চলে আর এই কারণেই তারা সফল বা ধনী হতে পারে না। আর এটাই হচ্ছে টাকার সাইকোলজি।
কি রয়েছে দা সাইকোলজি অফ মানি (The psychology of money) বইটিতে?
The psychology of money বইটির লেখক মর্গ্যান হার্টসেল আসলে এই বইটিতে টাকা সাইকোলজি নিয়ে এমন ভাবে আলোচনা করা হয়েছে যেটি সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি মানুষকে টাকার গুরুত্ব এবং টাকাকে কিভাবে ব্যবহার করা এবং সঞ্চয় করা যায় এ নিয়োগ খুঁটিনাটি তথ্য তুলে ধরেছে। এই বইটিতে টাকা পয়সা নিয়ে বা ধনী হওয়া নিয়ে এমন কতগুলো পয়েন্ট রয়েছে যেগুলো আপনার জীবন বদলে দিতে পারে। তবে আমরা নিচে কিছু সংখ্যক পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করলাম:
টাকা পয়সা কে কখনোই নষ্ট করো না!
The psychology of money বইটির লেখক Morgan housel তার ক্যারিয়ারের শুরুতে একটি হোটেলে চাকরি করতেন। তিনি সেখানে লক্ষ্য করতেন একটি টেকনোলজি ওয়ালা একজন ব্যক্তি সেই হোটেলে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা নষ্ট করতেন সঙ্গে অনেক বিনা কারণে অনেক সময়ও নষ্ট করত। কিন্তু সেই টেকনোলজি ওয়ালা ব্যক্তিটি সেই সময় প্রচুর টাকা উপার্জন করত সঙ্গে তার কিছু কোম্পানিও তৈরি করেছেন যেগুলো থেকে সে অনেক পরিমাণে উপার্জন করত।
কিন্তু লেখক সেই ব্যক্তিটির মধ্যে একটা জিনিস স্পষ্ট হবে লক্ষ্য করেছে যে সেই ব্যক্তিটি কখনো টাকা-পয়সার মূল্য দিতে জানে নি। সে তার প্রয়োজনে তুলনায় অধিক পরিমাণ টাকা প্রতিদিন নষ্ট করত। আসলে টাকা পয়সার প্রতি তার কোনো রকম মর্যাদা ছিল না। লেখক এও দেখেন সেই ব্যক্তিটি সর্বদা তার সঙ্গে অনেক মোটা মোটা টাকার বান্ডিল নিয়ে চলাফেরা করতো এছাড়াও সেই ব্যক্তির মদের নেশাও ছিল।
আরও দেখুন>> Becoming a Rich Man idea: খুব সহজে কম পরিশ্রম করে হয়ে উঠুন একজন ধনী ব্যক্তি। জানুন বিস্তারিত!
আর এত পরিমান টাকা নষ্ট করার পিছনে প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সে সর্বদা দেখাতে পছন্দ করত যে সে কতটা ধনী। সে একদিন তার এক বন্ধুর সঙ্গে কোন রেস্টুরেন্টে দেখা করে এবং তার বন্ধুকে কিছু পরিমাণ বান্ডেল দিয়ে সেগুলোকে খুচরো টাকা আনতে বলে। এবং ধনী ব্যক্তিটি তার বন্ধু সহকারে সেই টাকাগুলো নিয়ে নদীর জলে ছুড়ে মারতে থাকে শুধু এটা দেখার জন্য যে তাদের মধ্যে কে কতটা বেশি ঢিল ছুটতে পারে। আর এর মাধ্যমে লেখক বুঝাতে চেয়েছে যে সেই ধনী ব্যক্তিটি টাকার ব্যাপারে কতটা বেপরোয়া ছিল।
কিন্তু ভাগ্যক্রমে লেখক কয়েক বছর পর সেই ব্যক্তিটিকে দেখতে পান। যেখানে লেখক দেখতে পান সেই টাকা ওয়ালা ধনী ব্যক্তিটি এখন প্রায় ভিখারি হয়ে গেছে। কিন্তু তারই বন্ধু এখন অনেক বড় ব্যবসায়ী। কারণে তার সমস্ত কোম্পানিতে লসের ছায়া চলে এসেছে। তার কোম্পানিগুলো প্রায় বন্ধের পথে বসেছে।
সঙ্গে সঙ্গে লেখক আরো একটি আমেরিকান বাসিন্দা রোলান্ড জেন্টস নামে এক ব্যক্তি যিনি কিনা একটি গ্রাম অঞ্চলের বাসিন্দা। তিনি প্রতিদিন দিনমজুরের কাজ করতো সেটা আবার কোন গ্যারেজে। এবং সেখান থেকে সে খুবই সামান্য পরিমাণ টাকা উপার্জন করত। সেই কারণে তাকে সর্বদা গরিবের ভালোই চলতে হতো। এমনকি সেই ব্যক্তিকে মাঝে মাঝেই ঝাড়ুদার দের কাজ পর্যন্ত করতে হয়েছে। অথচ যখন সেই ব্যক্তি মারা যায় তার পর জানা যায় সেই ব্যক্তির কাছে দুই বিলিয়ন ডলারের সম্পদ রয়েছে।
এবার প্রশ্ন হচ্ছে গ্রাম অঞ্চলে বাস করা এই গরিব দিনমজুরের কাছে দুই বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি এলো কিভাবে? এর উত্তরটা খুবই সোজা কারণ সেই দিনমজুর মাসে যে পরিমাণ টাকা উপার্জন করেছে তার কিছু পরিমাণ টাকা মিউচুয়াল ফান্ডে বা বিভিন্ন জায়গায় ইনভেস্ট করেছে। যা রকেটের গতিতে দিনের পর দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এখন তার মোট সম্পত্তি দুই বিলিয়ন ডলার।
আর এই দুই বাস্তব কাহিনীর মধ্যে লেখক বোঝাতে চেয়েছে আপনি যেমনই হন না কেন আপনার টাকা পয়সা এবং আপনার ব্যবসা সম্পূর্ণ আপনার টাকার ব্যবহারের উপর নির্ভর করবে। আপনি টাকাকে কিভাবে ব্যবহার করছেন সেটিই প্রধান বিষয়। কারণ টাকা পয়সা সেভ করার জন্য কোন টেকনিকের প্রয়োজন হয় না প্রয়োজন হয় শুধু টাকার ব্যবহার জানা।
উপসংহার:
এছাড়াও এই বইটিতে বিভিন্ন ধরনের টাকা বাস্তব সাইকোলজি ও টাকা সেভ করার পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। যেগুলো একজন মানুষের প্রতিনিয়ত অত্যন্ত প্রয়োজন। কারণ আপনি ধনী হবেন কি হবেন না সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনি আপনার টাকার সাথে কি রকমের ব্যবহার করছেন। এটি the psychology of money বইটির একটি পার্ট নিয়ে আলোচনা করলাম এবং এটি আমাদের প্রথম পর্ব।
আমরা পরবর্তীতে আরও বিভিন্ন পাট গুলো প্রকাশ করব। আর সেগুলো দেখতে অবশ্যই আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জয়েন করো।
আরও দেখুন>> Small Business Idea : এই বিজনেস করলে আপনি খুব সহজেই হয়ে উঠবেন একজন সফল Business Man ! জানুন বিস্তারিত!
প্রশ্ন ও উত্তর:
The psychology of money বইটি পড়লে কি সত্যি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়িক হওয়া সম্ভব?
যদি আপনি বইটি ভালো করে পড়েন এবং টাকার গুরুত্ব কি এ বিষয়টি ভালো করে খেয়াল করেন তবে আপনি নিশ্চয়ই আপনার টাকাকে কিভাবে বৃদ্ধি করা লাগে অর্থাৎ টাকার কি ধরনের ব্যবহার করা উচিত এটি আপনি জেনে যাবেন। হয়তো আপনার ব্যবসা বৃদ্ধি নাও হতে পারে কিন্তু আপনি আপনার ব্যবসা বা ধনী হতে টাকার প্রয়োজন বা গুরুত্ব বুঝতে পারবে।
The psychology of money বইটি কি বাংলায় পাওয়া যাবে?
হ্যাঁ পেতে পারেন। তবে বইটি ইংলিশ এই লেখা হয়েছে এবং এরপর বিভিন্ন প্রকার অডিও তৈরি করা হয়েছে যা আপনারা বিভিন্ন প্রকার মিডিয়া থেকে হিন্দি ও অন্যান্য ভাষায় শুনতে পারেন। জনপ্রিয় অডিও অ্যালবাম পেয়ে যাবেন KUKU FM এ যেটা আপনি প্লেস্টোর এ পেয়ে যাবেন।